نفاق. অর্থ এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করা এবং অন্য দরজা দিয়ে বের হওয়া। মুনাফিকী এক ধরনের ধোকা, প্রতারণা বাহ্যিকভাবে কল্যাণের কথা বলা আর গোপনে তার খেলাপ করা। শরীয়তের পরিভাষায় বাহ্যিকভাবে ঈমান প্রকাশ করা এবং অন্তরে কুফুরি পোষণ করা। সুতারাং কাফেরের তুলনায় মুনাফিক অধিক ভয়ঙ্কর। কারণ মুনাফিক কুফুরি গোপন করে ঈমান জাহির করে। সে কারণে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন কাফেরের তুলনায় মুনাফিকেেের অবস্থা যে অধিকতর নিকৃষ্ট, সে বিষয়ে ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে। (নিসা ১৪৫)।
শরীয়তের দৃষ্টিতে নিফাক দু'প্রকার। একটি আন্ নিফাকুল বা বড় ধরনের কপটত। আর তা হল মানুষ ব্যাহিক ভাবে আল্লাহ, ফেরেশতা, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ এবং পরকালে বিশ্বাস প্রকাশ করবে, আর গোপনে উত্ত বিষয়সমূহের সব কটি বা কোন কোনটি অস্বীকার করবে। এ ধরনের আকীদার ক্ষেত্রে নিফাক বা কপটুতা সরাসরি কুফরি।
দ্বিতীয় টি আন নিফাকুল আসগার তথা ছোট ধরনের কপটতা। আর তা হলো আমলের ক্ষেত্রে কপটতা যা কবিরা গুনাহসমূহের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন চারটি বিষয় যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে নিরেট মুনাফিক। আর এ চারটি থেকে কোন বিষয় কারো মধ্যে পাওয়া গেলে তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে নেফাকের বৈশিষ্ট্য আছে বলে ধরে নেওয়া হবে। (সেগুলো হলো-মুনাফেক)। ১ আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে.২ কথা বলতে মিথ্যা বলে.৩ অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে.৪ বিতর্ক করলে অশ্লীল কথা বলে। (বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, রোজা, নামাজ আদায় করলেও এবং সে নিজেকে মুসলমান মনে করলেও। (সে মুনাফিক)। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন, তারা যখন ঈমানদারদের সাথে সাক্ষাৎ করে তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি, আর যখন তাদের নেতৃবৃন্দের কাছে নিভৃতে গমন করে তখন বলে আমরা তো তোমাদের সাথেই আছি আমরা তো তাদের সাথে উপহাস করি মাত্র। (বাকারা ১৪)।
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা সূরাতুল মুনাফিকুন নামে পৃথক একটি সূরা নাযিল করেছেন। মুনাফিকদের চরিত্র এমনই যে, তারা প্রকাশ্যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ইমান প্রকাশ করত আর গোপনে তার প্রতি হিংসা ও শত্রুতা লালন করত। সকল যুগের মুনাফিকের চরিত্র এমনই।
0 Comments